Saturday, March 25, 2023
Homeজেলাঝাড়গ্রামনদীর জল পান করতে হচ্ছে বেলপাহাড়ী থানার ৩৭টি মৌজার মানুষকে,ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা
Advertisement

নদীর জল পান করতে হচ্ছে বেলপাহাড়ী থানার ৩৭টি মৌজার মানুষকে,ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা

Advertisement

খড়গপুর ২৪×৭ ডিজিটাল: নদীর জলই পান করতে হচ্ছে বেলপাহাড়ী থানার ৩৭টি মৌজার মানুষকে। মুখ্যমন্ত্রী জানার পরও সুরাহা হয়নি পানীয় জলের। গ্রাম গুলির ঘরে ঘরে জল স্বপ্ন প্রকল্পে জলের লাইন সহ কল লাগানো হয়ে আজ তিন বছর হলো পড়ে রয়েছে। এখনো চালু হয়নি। জলের উৎস্বর ব্যাবস্থা না করেই লোকসভা ভোটের মুখে পাইপ বিছানো হয়। আজ অবধি কোথা থেকে জল সরবরাহ করা হবে বা কোথায় ডীপটিউবল বসবে সেই কাজই করা হয়নি। মাটির নীচে কোটী কোটী টাকার পাইপ করচ দেখিয়ে কাটমানিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। 

ভেলাইডিহা গ্রামের পার্বতী পাল, জ্যোৎস্না পাল, পদ্মাবতী পাল প্রমুখ মহিলাদের অভিযোগ তিন মাস হলো পি এইচ ই দপ্তরের পানীয় জলের গাড়ী আর গ্রাম গুলিতে আসেনা। জলের গাড়ী সারি সারি বিডিও দপ্তরে দাঁড়িয়ে। ব্লক দপ্তরে গিয়ে জলের গাড়ীর দাবী জানালে বলা হয় তেল খরচ বরাদ্দ নেই। এমন অভিযোগ ভেলাইডিহা, কেচন্দা, সাহাড়ী, শিলদা সহ একের পর এক মৌজায়।

- Advertisement -
- Advertisement -

শারদ উৎসবের আগে সপ্তাহে একদিন, কখনো দুদিন পানীয় জলের গাড়ীতে করে গ্রাম গুলিতে জল পৌঁছানো হতো। এখন সরকারী কোষাগারে সেই জল পৌঁছে দেওয়ার কাজে টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় নদীর জল পান করতে হচ্ছে বেলপাহাড়ী থানার একাধিক মৌজার মানুষকে। স্নান করতে গিয়ে নদীর চরে গর্ত খুঁড়ে রেখে আসেন মহিলারা। সারা রাত ঝর্না হয়ে চু্য়ে চুয়ে কিছুটা স্বচ্চ জল জমা হয়। সেই জমা জল হাঁড়ি বালতি বোতলে ভরে নিয়ে এসে পান করেন বাচ্ছা থেকে বৃদ্ধ। এতে দুদিন তিন দিন অন্তর পেটের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকার মানুষ।

তাই বেলপাহাড়ী থানার ভিলাইডহা, শিলদা সহ একাধিক গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ৩৭টি মৌজার মানুষকে ডুলুং নদীর জলই ব্যাবহার করতে হয় স্নান সহ নিত্যকাজে। গত তিন বছর ধরে জলের সংকোট শীত নামলেই শুরু হয়ে যায়। গত ১৫ই নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী বেলপাহাড়ীতে সভা করে ফেরার পথে সাহাড়ী গ্রামে গেলে গ্রামের মহিলারা পানীয় জলের জন্য দুই তিন কিমি পথ গিয়ে নদীর জল নিয়ে এসে ব্যাবহার করতে হয় জানিয়ে বিক্ষোভ ক্ষোভ উগরে দেন। সরকারী বিজ্ঞাপন দিয়ে জঙ্গলমহল হাঁসছে এমন বিজ্ঞাপনের মোড়কের মুখোশ খুলে পড়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর সামনে। সেই পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে এখনো পর্যন্ত ন্যুনতম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।  

কেচন্দা গ্রামের ৩০০ পরিবারকে হাড়াই কিমি মেঠো পথে গিয়ে ডুলুং নদীর জল নিয়ে আসতে হয় নিত্যকাজে। ১২৭ জন পড়ুয়া কেচন্দা প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের রান্নার জলও নদী জলে হয়। পড়ুয়ারা বোতলে করে ঘর থেকে সেই নদীর চরের গর্তে জমা ঝরা জল নিয়ে আসে। মিড ডে মিল খাওয়ার পর ১কিমি আলপথে গিয়ে মাঠের ডোবায় থালা সহ হাত মুখ ধূয়ে। শিক্ষক সহ মিড ডে মিলের কর্মীরা পালা করে বাচ্ছা বাচ্চা পড়ুয়াদের সাথে গিয়ে লক্ষ নজর করতে হয়। প্রতিদিন এত জনের রান্নার জল মিড ডে মিলের কর্মীদেরই নিয়ে আসতে হয় মেঠো পথ দিয়ে। এবার রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে জলের সংকোটে। সেই নিয়ে অভিভাবকদের সাথে চলছে আলোচনা। বিডিও দপ্তর, পঞ্চায়েত দপ্তর কে বারে বারে জানিয়েও পানীয় জলের কোনো ব্যাবস্থাই হয়নি গত তিন বছর ধরে। 

এমন দৃশ্য বেলপাহাড়ী থানার সমস্ত শিশু শিক্ষা কেন্দ্র সহ প্রাথমিক স্কুল গুলিতে। পাহাড় ফাটিয়ে অবাধে ধাতব পদার্থ লুঠ, জঙ্গল ধ্বংস সহ নদীর পাড়, নদীর চর সহ নদীর বুকে পাইপ চালিয়ে মেসিন দিয়ে গত আট নয় বছর ধরে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ হাজার লরি ডাম্পারে বালি লুঠ করে পাচার করায় আজ রুক্ষ্ম বনাঞ্চলের জলস্তর আরোও নীচে নেমে গিয়ে বাস্তুতন্ত্র সহ প্রাকৃতিক ভারসাম্যর উপর আঘাত নামিয়ে পানীয় জলের বিপর্যয় ডেকে আনা হয়েছে। জঙ্গল মহল হাঁসছে বলে লুঠ করা হয়েছে। লাভবান হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি দুই শাষকদলের নেতারা সহ প্রসাশনিক স্তরের কর্তারা। 

Advertisement

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

error: Content is protected !!