খড়গপুর: বিজেপির তারকা বিধায়ক হিরণকে না পাওয়ার ক্ষোভ গোটা খড়গপুর শহর জুড়েই রয়েছে। এবারে সেই ক্ষোভ বাড়ছে খড়গপুর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায়। এই ওয়ার্ড থেকে গত পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির এই তারকা বিধায়ক হিরণ কাউন্সিলর হিসাবে জয়ী হয়েছেন। অভিযোগ নির্বাচনের পর থেকে আর তাঁকে এলাকায় দেখা পাওয়া যায় না।
দিন ছয়েক আগে হিরণের নিজের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লী এলাকার বাসিন্দারা রাস্তা ও নিকাশি নালার বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন। পথ অবরোধ পর্যন্ত হয়েছিল। এবারে এই ওয়ার্ডের দীনেশনগর এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জল না পাওয়া যাওয়ায়। তাঁকে ভাঁওতাবাজ বলে উল্লেখ করলেন এলাকার বাসিন্দারা। এই দুঃসহ গরমে জল না থাকায় এই এলাকার বাসিন্দাদের এক দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে কাটাতে হচ্ছে। তার উপর বেহাল রাস্তার অভিযোগ তো রয়েছেই। যদিও এই পরিস্থিতির দায় হিরণ পুরোপুরি তৃণমূল পরিচালিত খড়গপুর পুরসভার ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তবে কাউন্সিলর তথা বিধায়কের এই ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দীনেশনগর এলাকার বাসিন্দারা সহ এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা খড়গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সহ সভাপতি জহরলাল পাল।
তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় হস্তক্ষেপ করেছেন পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ। এলাকার বাসিন্দা তথা দীর্ঘদিনের বিজেপির সমর্থক সুভাষ রায় বললেন ” দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে বিজেপিকে ভোট দিচ্ছি। এলাকায় জলের সমস্যা হচ্ছে। জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। রাস্তা বেহাল। একটু বৃষ্টি হলেই এক হাঁটু জল দাঁড়িয়ে যায়। অথচ হিরণ দিল্লী বোম্বে করে বেরাচ্ছেন। ভাঁওতাবাজি দিয়ে ভোট নিয়েছেন। কিচ্ছু দেখাশোনা করেন না এখানে।” প্রবীণ মহিলা রসবতী মজুমদার বললেন ” জল পাই না। জল কিনে খেতে হয়। হিরণ আসেন না। ভোট নিয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে আর দেখা নেই।”
এলাকার ৭৩ বছরের প্রবীণ মানুষ স্বপন চৌধুরী বললেন ” জল নেই। দূর থেকে জল বয়ে আনতে হয়।” এদিকে এই এলাকার বাসিন্দা পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের জেলা কমিটির সহ সভাপতি জহরলাল পাল রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন ” এলাকার মানুষ হিরণকে খুঁজে পাচ্ছেন না। জল নেই। রাস্তার অবস্থাও বেহাল। মানুষের দুর্ভাগ্য। এখন তাঁরা বুঝতে পারছেন হিরণের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পড়ে কতটা ভুল করেছেন।” এদিকে এই ব্যাপারে হিরণ বললেন “দেউলিয়া খড়গপুর পুরসভার চরম ব্যর্থতা। টাকা নেই। তাই কোনও কাজ করতে পারছে না।
আমি বিধায়ক তহবিল থেকে ২৬ লক্ষেরও বেশি টাকা দিয়েছি মানুষকে পানীয় জল দেওয়ার জন্য। প্রায় এক বছর হয়ে গেল পুরসভা মানুষের জন্য ন্যূনতম পরিষেবা দিতে পারছে না।” অপরদিকে পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বললেন ” ওখানে দুটি বোরিং বিধায়ক তহবিলের টাকায় তৈরি হয়েছে। সেগুলি চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”